পাঁচ বছরের এষায়ু তার বন্ধু রমিতের মাথা দেওয়ালে ঠুকে ফাটিয়ে দিয়েছে। তার এই আচরনের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় সে বলে তার বাবা কথা না শুনলে দেওয়ালে মাথা ঠুকে দেয়। রমিত তার কথা শুনছিল না, তাই সেও বাবার মতন রমিতের মাথা দেওয়ালে ঠুকে দিয়েছে।
দশ বছরের স্বাগতার মা একদিন যখন তাকে মারধর করতে যাচ্ছিলেন সেই মুহূর্তে সে চিৎকার করে বলে, কত মারবে মারো, আমার কিচ্ছু হবে না। আমি সহ্য করে নেবো। অসহায় মা টি ছুটে আসেন আমার কাছে। তার দুচোখে ভয় ও হতাশা। কারণ তার শাসন করার একমাত্র উপায়টি আর কাজ করছেনা!!
- মারধর করার প্রবণতা অনেক অভিভাবকদের মধ্যেই থাকে। কিন্তু জানেন কি এর ফলে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আপনার সন্তান?
আপনি যদি আপনার সন্তানকে মারধর করেন তাহলে তার মধ্যেও আস্তে আস্তে তৈরী হবে সাংঘাতিক আক্রোশ। বয়ঃসন্ধির সময় সেই আক্রোশ একটি সাংঘাতিক রূপ নিতে পারে। বিভিন্ন রিসার্চের দ্বারা এটা প্রমাণিত হয়েছে যে সকল মানুষ বিভিন্নরকম অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত, তাদের শৈশব সবসময়ই অত্যধিক শারীরিক আঘাতের মধ্যে দিয়ে কেটেছে। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী একটি শিশু তার জীবনের মূল্যবোধ শেখে তার অভিভাবকদের দেখে। সেই অভিভাবকত্বে যদি মেশানো থাকে ভালোবাসা এবং সহমর্মিতা তবেই তার শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়। তাই পরিবর্তন করুন আপনার শাসনের প্রকৃতি। - অনেক কর্মরত অভিভাবক আমায় বলেন যে তারা যখন কর্মস্থল থেকে বাড়ী ফেরেন তখন তাদের সন্তানদের মধ্যে অত্যন্ত বেশী দুষ্টুমি লক্ষ্য করা যায়। সারাদিনের কর্মক্লান্ত শরীরে আর তা নেওয়া যায়না। ফলে তাদের ধৈর্যচ্যুতি হয়। তখনই তারা মারধর করেন বাচ্চাকে। এ বিষয়ে একটি কথা বলার খুবই প্রয়োজন। যখনই দেখবেন আপনি বাড়ী ফেরা মাত্র বাচ্চা খুব দুষ্টুমি করছে, তার মানে ও আপনাকে সম্পূর্ণভাবে পেতে চায়। কোথাও নিশ্চিতভাবে আপনার ঘাটতি হচ্ছে ওকে দেওয়া সময়ের পরিমাণ। নতুনভাবে ভাবুন এ বিষয়ে। বাড়ীতে ফিরে কি কি করবেন বা খেলবেন ওর সাথে মনে মনে তারও একটি তালিকা তৈরী করে ফেলুন। দেখবেন আস্তে আস্তে ওর দুষ্টুমি কমতে শুরু করবে।
- যে বাচ্চা কোনও অপরাধ করলেই তাকে মারধর করে শাস্তি দেওয়া হয়, তার মধ্যে কখনই অপরাধবোধ বা নিজের ভুলত্রুটি সংশোধন করার ভাবনা তৈরী হয় না। মারধরের বদলে তখন তার মনে প্রতিশোধ স্পৃহা তীব্র হয়ে ওঠে। সমস্যা সমাধান করার কোন চেষ্টাই সে আর করেনা।
- বাচ্চার সাথে অভিভাবকের ভালো রসায়নের প্রধাণ উপকরন হলো ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধাজ্ঞাপক সম্পর্ক। অনেক অভিভাবকই আমায় বলেন, আমি তো মারধর করি তবুও আমার বাচ্চা খুব ভালোবাসে আমায়। একবার ওর হৃদয় ছুঁয়ে দেখুন, সেই ভালোবাসা কিছুটা ভয় থেকে জন্মাচ্ছেনা তো? আপনার সন্তানকে যত বেশী মারধর করে শাসন করবেন, ততই ও নিজেকে গুটিয়ে নেবে। আপনাকে সত্যি কথা বলতে ভয় পাবে। নিজের মূল্যবোধ থেকে চ্যুত হবে। শুধু তাই নয়, প্রতিটা কাজে তৈরী হবে অনীহা এবং আত্মবিশ্বাসের অভাব।
- অনেক অভিভাবকের কাছে বাচ্চাকে সঠিকভাবে শাসন করার পদ্ধতিটিই জানা নেই। তারা মনে করেন শাসনের পরিভাষা হলো মারধর। তাদের জন্য বলে রাখি বাচ্চাকে না মারধর করে শাসন করার কিছু পদ্ধতি আছে। যেমন টাইম আউট, লজিক্যাল কনসিকুয়েন্স বা উইথড্রল। এ পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে বাচ্চা শেখে অপরাধবোধ, যেটি খুব জরুরি।
- বয়ঃসন্ধির সময় অনেক বাচ্চার আচরণ তাদের অভিভাবকদের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ বিষয়ে একটি কেস স্টাডির উল্লেখ না করে পারছিনা। এক টিনএজার সন্তানের অভিভাবক আমার কাছে এসে বলেছিলেন তার সন্তানকে মারতে যাওয়ায় তৎক্ষনাৎ সে তার মায়ের হাতটি ধরে মুচড়ে দেয়। তাতে স্তম্ভিত হয়ে যান মা টি। এ বিষয়ে বলে রাখি হঠাৎ করে কিন্তু তার সন্তানের মধ্যে এ আচরণ আসেনি। দীর্ঘদিন ধরে মায়ের কাছে মার খেতে খেতে তার কৈশোর মন হঠাৎ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। তার ফলেই এ ঘটনা।
- যে সকল অভিভাবকেরা বাচ্চার শরীরের নিম্নাংশে ( শিরদাঁড়ার শেষ থেকে পায়ের পাতা) আঘাত করেন তারা সাবধান থাকুন। এতে একটি শকওয়েভ সঞ্চারিত হয় বাচ্চাদের শরীরে, যার থেকে আপনার বাচ্চার নার্ভ সংক্রান্ত বিভিন্ন অসুখ এমনকি প্যারালিসিস পর্যন্ত হতে পারে।
- মারধর করার অভ্যাস আপনার সন্তানের মধ্যে একটি ভুল ধারণার জন্ম দেয়। সে মনে করে দুর্বলের ওপর সব সময় মারধর করাটাই বোধহয় সামাজিক নিয়ম। শুধু তাই নয়, বাচ্চা কখনই শেখেনা উত্তেজনার সময় নিজের স্নায়ুতন্ত্রকে কিভাবে নিয়ন্ত্রনে রাখতে হয়।
এরপরেও কি আপনি আপনার সন্তানকে মারধর করবেন? নিজের পেরেন্টিং পদ্ধতি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করুন। দেখবেন উত্তর আপনি নিজেই পেয়ে যাবেন।
Very useful…thank very much!!!!!
Register me.
বেশ শিক্ষণীয়,দারুন উপস্থাপনা
Khub vlo laglo apnar lekhati pore.anek Kichu jnlam.ro sundor lekha porar ebong ro vlo Kichu janar apekkhay thaklm.
Very useful…Thank you…
Thank u Payel di…kal 24 ghontai tomar programme dekhechhi…thank u again for ur suggestions…
Sotti katha ato Kichu konodin bujhte parini. R konodin haat tulbo na. Asonkho dhonnobad.
Apnar lekha ta pore khub valo laglo,evabe manar cheshta korbo.tabe duto terms logical concicuence,time out er matter ta ektu discuss korle valo hoi.
Time out and logical consiquese or withdrawl process tar bapare Jodi details e janan madam… That will be more useful for us…. Please madam…
Good advices
Nijeke khub kharap mone hoche ma’am…majhe modhye chheleder vison mari ma’am…pore bujhte pari…khuub kadi…kintu bises koekta muhurte nijeke control korte parina…apnar ae kathagulo amar cholar pother patheo
Excellent reality
Please discuss about time out and logical consiquese or withdrawal.
Thnks. ..amr jibon e ma howa start hye gache.amr chele r age 1 yrs 4 mnths …amr jnno Ai post ta khub e important.