প্রায় তিনমাস হতে চলল আপনার সন্তান ঘরবন্দী। আগামী কয়েকমাসের মধ্যে স্কুল খোলারও সম্ভাবনা নেই। তাই ক্রমেই ওরা হয়ে উঠছে মনমরা, খিটখিটে আর মানসিকভাবে ক্লান্ত। কিন্তু এভাবে দিনের পর দিন চলে ওদের শিশুমনে ক্রমশ চাপ বাড়বে। তার প্রভাব পড়বে সব ক্ষেত্রে। তাহলে উপায়?
১। দিনের শুরুতেই ওদের নিয়ে বসুন, ওদের কাছ থেকে শুনুন কিভাবে ওরা দিনটা কাটাতে চায়। তারপর একসাথে বসে একটা রুটিন বানান। যার মধ্যে অবশ্যই পড়াশোনা, খেলাধুলো, গল্প আড্ডার একটা ভারসাম্য থাকবে।
২। প্রতিদিন নিয়ম করে বিকেলে ওদের একটু বাইরে বয়া বাড়ির ছাদে নিয়ে যান। যদি কেউ সাইক্লিং করতে চায়, বাধা দেবেন না, অন্যান্য বাচ্চা রা যদি রাজি হয় খেলাধুলো করতে, অবশ্যই অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে তারা খেলতেই পারে। তবে অবশ্যই ভাইরাসের থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় সাবধানতা নিয়ে।
৩। প্রতিদিন ওদের বিজ্ঞান বা সাহিত্য ভিত্তিক একটি করে নতুন তথ্য লিখতে বলুন নোটবুকে। সাথে সম্ভব হলে ছবি লাগাতে বা আঁকতে পারে। এতে ওর নিজের একটা তথ্য ভাণ্ডার তৈরি হবে।
৪। ওদের নিজের মতন করে কিছু নতুন খেলা, বিজ্ঞান ভিত্তিক এক্সপেরিমেন্ট করতে বলুন(অবশ্যই সাবধানতা নিয়ে)।
৫। ছোট বাচ্চাদের এখন বিভিন্নরকম ইনডোর গেম পাওয়া যায়, যা ওদের মানসিক বিকাশে বিশেষভাবে সহায়তা করে। চেষ্টা করুন সেসব খেলা গুলোর সাথে ওদের পরিচয় করাতে।
৬। প্রতিদিন অন্তত এক পাতা করে গল্প বই পড়ার একটা অভ্যাস তৈরি করতে উৎসাহ দিন এই সময়টায়। প্রথমে হয়ত উৎসাহ পাবেনা, কিন্তু অভিভাবকদের হাল ছাড়লে হবেনা, পাশে থাকতে হবে এই সময়ে।
৭। বাড়ির সহজ কাজগুলোর কিছু দায়িত্ব ওদের দিন, এবং কাজ যত্নসহকারে করতে পারলে ওদের পুরস্কৃত করুন মাঝে মাঝে।
৮। এই দীর্ঘ বাড়িতে থাকার সময় চেষ্টা করুন ওদের সাথে প্রকৃতির সাথে একটা সহজ সম্পর্ক তৈরি করতে। নিয়মিত যত্ন করতে দিন বাড়ির গাছেদের। আগাছা পরিষ্কার থেকে মাটিতে হাত লাগানো, সবই করার ছাড়পত্র দিন ওদের।
৯। যেহেতু অনেক স্কুলেই অনলাইন ক্লাস চলছে, দিনের বেশ কিছুক্ষণ সময় ওদের স্ক্রিনের সামনে থাকতে হয়। তাই সবসময় চেষ্টা করুন ওরা যাতে অবসর সময়টা টিভি বা মোবাইল ফোন ছাড়া কাটাতে পারে। প্রথম কিছুদিন অসুবিধে হলে দেখবেন, আসতে আসতে ওটাই ওদের অভ্যাস হয়ে যাবে। ছুটির দিনে বরং সবাই মিলে একসাথে বসে কিছু ভালো অনুষ্ঠান বা সিনেমা দেখতে পারেন।
১০। ওদের বন্ধুবান্ধবদের সাথে নিয়মিত ফোনে বা ভিডিও কলের মারফত কোথা বলতে দিন, যাতে ওরা নিজেদের বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন না মনে করে।