লকডাউনের এই দীর্ঘ সময় অতিক্রম করতে খুব স্ট্রেসড লাগছে নিজেকে?

লকডাউনের এই দীর্ঘ সময় অতিক্রম করতে খুব স্ট্রেসড লাগছে নিজেকে? আশঙ্কা, উদ্বেগ গ্রাস করছে আপনাকে? মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন অকারণেই?
জেনে নিন এ সমস্যা থেকে রেহাই পাবার সাতটি সহজ উপায়।

১। নিজেকে একটু ব্রেক দিন। সবসময় জেনে রাখবেন আপনি যখন ভীষণ রকম মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি বোধ করছেন, তার অর্থ হলো আপনার শরীর ও মনের নিজস্ব ইতিবাচক উপাদানগুলোর জোগান ঘাটতি পড়ছে। তাই দৈনন্দিন জীবনকে অত্যন্ত বেশী পরিমান কর্মব্যস্ত করে তুলবেন না। মনে রাখবেন এই সময়ে তিনটি বিষয়ের ওপরই নজর দেওয়া দরকার.. পরিবারের সকলের স্বাস্থ্যের তদারকি করা,সময়মতন পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করা এবং নিজের মনকে উত্তেজিত হতে না দেওয়া। প্রচুর কাজের তালিকা নিয়ে কাজ করতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না এ সময়ে। বরং সহজ , সীমিত কাজের তালিকা বানান। বাচ্চাদের সামনে নিজেকে ইতিবাচক রাখা খুব জরুরি। তাই বকাঝকার রুটিনকে একটু কাটছাঁট করা একান্ত প্রয়োজন।

২। শরীরকে সচল রাখুন। এই গৃহবন্দী দশায় নিজের মনকে ইতিবাচক রাখার মহৌষধ হলো এক্সারসাইজ করা। এতে শুধু মনের ভয় দূর হবেনা, আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে খেলাধূলো, নাচগান, হাসি-ঠাট্টা করুন নিয়মিত। আপনার প্রাণবন্ত হাসি এই কঠিন সময় অতিক্রম করার অ্যান্টিডোট।

৩। মেডিটেশন করা আবশ্যক। এই সময়ে মনের প্রশান্তি একান্তই প্রয়োজন। তাই নিয়ম করে কম সময়ের জন্য হলেও সহজ পদ্ধতিতে মেডিটেশন করুন। পরিবারের সকলে মিলেই এটা করলে ভালো হয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্নরকম যোগের ভিডিও দেখে এ অভ্যাস করুন প্রতিদিন।

৪। জনসংযোগ রাখা জরুরি। লকআউটে গৃহবন্দী হয়ে আছেন মানে কখনই ভাববেন না আপনি একা হয়ে গেছেন। বরং আরো বেশী করে সংযোগ রাখুন সবার সঙ্গে। ফোন, ভিডিও চ্যাট সবরকম প্রযুক্তির সহায়তা নিন প্রয়োজন হলে। এমনকি নিজের মনখারাপ বা আশঙ্কার কথা উজাড় করে বলুন প্রিয় কোন মানুষকে যিনি খুব ভালো শ্রোতা।

৫। বাহ্যিক চাপের উৎসদের কমিয়ে ফেলুন। এই সময়ে বারবার টেলিভিশনে খবর শোনা বা সোশ্যাল মিডিয়াতে ক্রমাগত চোখ রাখা মানসিক উদ্বেগের একটি অন্যতম বড় কারণ হতে পারে। তাই চেষ্টা করুন এদের থেকে নিরস্ত থাকতে। সম্ভব হলে এগুলো দেখার জন্য একটা শিডিউল মেনে চলুন।

৬। নিজেকে যত্ন করুন। নিজের পছন্দের কাজগুলো নিয়ে একটা তালিকা বানিয়ে ফেলুন। গান শুনুন পর্যাপ্ত,সুস্বাদু রান্না করুন, সময় নিয়ে রূপচর্চা করুন, চুলের যত্ন নিন। এতে মন প্রফুল্ল থাকতে বাধ্য।

৭। ঝগড়াঝাঁটি থেকে বিরত থাকুন। এই সময়ে যাই হোকনা কেন চিৎকার, চেঁচামেচি, ঝগড়া এসবের মধ্যে নিজেকে জড়াবেন না। এই সময়ে দাম্পত্যকলহ হলে পারিবারিক নিয়মে তা ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। ফলে বাচ্চারা অবহেলিত হবে। নিজেরাও শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। বরং ঝগড়া কারণগুলো এখন তোলা থাক কুলুঙ্গিতে, পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার সেসব নিয়ে হিসেব নিকেশ হবে না হয়।

এভাবেই কঠিন সময়টা কাটিয়ে ফেলুন ইতিবাচকভাবে। জীবনকে আবার নতুনভাবে উপভোগ করতে শুরু করুন।